Responsive Image

ডিজিটাল জালের ফাঁদে

Feb 12, 2025,   3 min  read

স্ক্যাম অভিজ্ঞতা

আমি, মার্গারেট টার্নার, বয়স এখন ৬৫। জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে সংসার আর সন্তানদের নিয়েই। এখন সন্তানরা বড় হয়েছে, সংসারের হাল ধরেছে। অবসর জীবনটা আমি কাটাই বই পড়ে, টেলিভিশন দেখে আর মাঝেমাঝে ফেসবুক স্ক্রল করে।  

একদিন ফেসবুকে একটি মেসেজ পেলাম এক অচেনা মানুষ থেকে। নাম তার "রবার্ট"। রবার্ট নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিল। কথায় কথায় আমার সাথে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। রবার্টের কথায় আমি মুগ্ধ হলাম। মনে মনে ভাবলাম, এত ভালো মানুষ আজকাল কমই দেখা যায়।  

কিছুদিন পর রবার্ট আমাকে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কথা বলল। সে বলল, এটা এখন সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ। সে নিজেও এতে বিনিয়োগ করে অনেক টাকা কামিয়েছে। আমি প্রথমে কিছুটা দ্বিধায় পড়লাম। আমি তো এই ডিজিটাল জগতের ব্যাপারে তেমন কিছু জানি না। কিন্তু রবার্টের কথায় আমি আস্থা রাখলাম। সে আমাকে একটি লিংক পাঠাল এবং বলল, এখানে টাকা ইনভেস্ট করলেই আমি তিন মাসের পর মাসে মাসে লাভ পাব।  

 

আমি প্রথমে কিছু টাকা ইনভেস্ট করলাম। কিছুদিন পর দেখলাম, আমার অ্যাকাউন্টে টাকা বেড়েছে। রবার্ট আমাকে আরও টাকা ইনভেস্ট করতে বলল। আমি এবার আমার সঞ্চয়ের বেশিরভাগ টাকা ইনভেস্ট করলাম। কিন্তু কিছুদিন পরই দেখলাম, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে সব টাকা উধাও হয়ে গেছে। রবার্টের সাথে যোগাযোগ করতেও পারলাম না। ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিও বন্ধ হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পারলাম, আমি একটি বড় ফাঁদে পড়েছি।  

এই গল্পটা শুধু আমারই নয়। ২০২৩ সালে আমেরিকায় ৬৯,০০০-এরও বেশি মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সি স্ক্যামের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৬,০০০-এরও বেশি অভিযোগ এসেছে, যেখানে তাদের ক্ষতির পরিমাণ ১.৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। এই স্ক্যামগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল "পিগ বুটচারিং স্ক্যাম"। এই স্ক্যামে প্রতারকরা ভুক্তভোগীর সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করে।  

 

ক্রিপ্টোকারেন্সি স্ক্যামের শিকার হওয়া মানুষের মধ্যে বেশিরভাগই এই ডিজিটাল জগতের সাথে তেমন পরিচিত নন। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষরা এই নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে কম জানেন বলে তারা সহজেই প্রতারকদের ফাঁদে পড়েন। প্রতারকরা তাদেরকে ক্রিপ্টোকারেন্সি কিওস্ক, বাবিট কয়েন বা এটিএম ব্যবহার করতে বলে, যা ব্যবহার করা খুব সহজ মনে হলেও আসলে তা প্রতারণার একটি হাতিয়ার।  

আমার মতো অনেক মানুষই এই স্ক্যামের শিকার হয়েছেন। তাদের অনেকেই এই ঘটনা রিপোর্ট করেননি, লজ্জা আর ভয়ে। কিন্তু এই স্ক্যামের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়ানো খুবই জরুরি। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের এই ডিজিটাল জগতের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। তাদেরকে বুঝতে হবে, সব লোভনীয় প্রস্তাবই সত্যি নয়। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অচেনা মানুষের সাথে আর্থিক লেনদেনে জড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।  

 

আমি এখনো আমার হারানো টাকার কথা ভেবে কষ্ট পাই। কিন্তু আমি এখন সচেতন। আমি চাই, আমার মতো আর কেউ যেন এই ফাঁদে না পড়ে। আমার এই কষ্টের গল্প যেন অন্য মানুষের জন্য একটি শিক্ষা হয়ে থাকে।

 

 

1
1

  • avatar
    Rokon 3 months ago

    gsdfgsdf

This site’s content is not investment advice, and we are not authorized to provide any. Nothing here endorses a specific trading strategy or investment decision. The information is general and submitted by project beneficiaries. Always assess it based on your goals, finances, and risks.

©2025 altswave.com. All rights reserved