আমি, অর্পিতা মজুমদার, বোস্টনের একজন আর্কিটেক্ট। ৩৫ বছর বয়সে বিচ্ছেদের পর একাকী জীবন কাটাচ্ছিলাম। একদিন টিন্ডারে "রাহুল" নামে একজনের সাথে মেলামেশা শুরু করলাম। সে নিজেকে নিউ ইয়র্কের একজন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার হিসেবে পরিচয় দিল।
প্রথম সপ্তাহ থেকেই রাহুলের আচরণ আমাকে মুগ্ধ করেছিল। প্রতিদিন সকালে "কফি খেয়েছো?" মেসেজ আর রাতে "ঘুম ভালো হোক" বলার অভ্যাস ছিল তার। এক মাস পর সে আমাকে বলল, "আমি তো ইতিমধ্যেই আর্থিক স্বাধীনতা পেয়ে গেছি। তুমি কতদিন পর্যন্ত এই কর্পোরেট দাসত্ব করবে?"
এরপর সে আমাকে একটি "এক্সক্লুসিভ" বিনিয়োগ সুযোগের কথা বলল। প্রথমে ১০,০০০ ডলার দিলাম। দুসপ্তাহ পর দেখি অ্যাকাউন্টে ১৪,০০০ ডলার! রাহুল খুশি হয়ে বলল, "দেখলে? আমি তোমার জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ বাছাই করি।"
আমি তখন আমার সঞ্চয়ের অর্ধেক টাকা ঢেলে দিলাম। রাহুল প্রতিদিন নতুন নতুন স্ক্রিনশট পাঠাত, যেখানে আমার "লাভ" বাড়ছিল।
কিন্তু যখন ২ লক্ষ ডলার তুলতে চাইলাম, তখন বলা হলো "২০% ট্যাক্স জমা দিতে হবে আগে"।
একদিন আমার ছোটভাই রাহুলের প্রোফাইল ছবি রিভার্স সার্চ করে দেখাল, এটা একজন দক্ষিণ আফ্রিকান মডেলের ছবি। সবই ছিল ধোঁকা। আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল।
তখন আমি বুঝলাম, অনলাইনে কখনোই পরিচিত কারো বিনিয়োগ পরামর্শ মানা যাবেনা। "গ্যারান্টিড রিটার্ন" বলে কিছু হয় না । প্রোফাইল ভেরিফিকেশন ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করা যায়না। কাউকে টাকা পাঠানোর আগে নিকটজনের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
আজ আমি আমার ভুল স্বীকার করছি, যাতে অন্য কেউ এই ফাঁদে না পড়ে। মনে রাখবেন, স্বপ্ন দেখানোর আগেই কেউ যদি টাকা চায়, তা অবশ্যই প্রতারণা।