সিলিকন ভ্যালি দীর্ঘদিন ধরে টেক জায়ান্ট এবং পুরুষ-প্রধান সংস্কৃতির আধিপত্যের জায়গা হয়ে আছে, যেখানে নারীদের জন্য টেবিলে জায়গা পাওয়া কঠিন। কিন্তু ক্রিপ্টো জগতে নারীরা একটি নতুন, ক্ষমতায়িত স্থান তৈরি করছেন এবং সেখানে তারা সফল হতে পারছেন। নিজস্ব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে শীর্ষ প্ল্যাটফর্মে নেতৃত্ব দেওয়া পর্যন্ত, ক্রিপ্টো জগতে নারীরা সাহসী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, নতুন উদ্যোগ তৈরি করছেন এবং ডিজিটাল মুদ্রার ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে কয়েন টেলিগ্রাফ এমন ১০ জন নারীর গল্প তুলে ধরেছেন যারা সিলিকন ভ্যালিকে "না" এবং ক্রিপ্টোকে "হ্যাঁ" বলেছেন। এর মাধ্যমে তারা পুরুষ-প্রধান অর্থনীতির জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তাদের যাত্রা সহনশীলতা, ঝুঁকি নেওয়া এবং ক্রিপ্টো জগতে নারীদের অপরিহার্য শক্তির অনুপ্রেরণাদায়ক গল্পগুলোর উপর আলোকপাত করা যাক এবার।
ক্রিপ্টো জগতে নারীদের অবস্থা
ব্লকচেইন জগতে নারীরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করছেন, যদিও সাফল্যের পথ খুব মসৃণ নয়। তবে আশার আলো হল ২০২৪ সালে প্যানটেরা ক্যাপিটালের গবেষণা অনুসারে, ক্রিপ্টো জগতে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি আয় করছেন, যা এই ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতার দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নির্দেশ করে।
তবে, শীর্ষ পদে এই শিল্পটি এখনও পুরুষ-প্রধান। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, ওয়েব৩ প্রতিষ্ঠাতাদের মাত্র ৭% নারী এবং শীর্ষক্রিপ্টো স্টার্টআপ গুলিতে ২৭% কর্মী নারী। ক্ষমতার অবস্থানে এই প্রতিনিধিত্বের অভাব এই সেক্টরে বিদ্যমান বাধাগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। তবে, ব্লকচেইন জগতে নারীরা সুযোগ গ্রহণ করছেন এবং ডিজিটাল অর্থনীতির ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছেন, প্রমাণ করছেন যে উদ্ভাবন এবং সাহস লিঙ্গ-নির্দিষ্ট নয়, এমনকি এই পুরুষ-প্রধান বাজারে।
এই প্রেক্ষিতে এটা জেনে রাখা ভাল যে, ২০২৪ সালের জেমিনির "গ্লোবাল স্টেট অফ ক্রিপ্টোরিপোর্ট" অনুসারে, ৬৯% ক্রিপ্টো মালিক নিজেদের পুরুষ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন, যেখানে নারীদের হার মাত্র ৩১%।
যেসব নারী ক্রিপ্টোকে আলিঙ্গন করেছেন
ওয়েব৩ জগতের ১০ জন এমন নারী আছেন যারা সিলিকন ভ্যালির পুরনো পথ ছেড়ে ক্রিপ্টো জগতে অর্থনীতি, প্রযুক্তি এবং নীতির ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেছেন, প্রমাণ করেছেন যে উদ্ভাবন শুধুমাত্র একটি পথ অনুসরণ করে না। বরং এটি নানাভাবে বিকশিত হতে পারে।
১. গালিয়া বেনার্টজি: Defi-র ক্ষেত্রে গালিয়া বেনার্টজি একজন শক্তিশালী নেতা। তিনি ব্যাঙ্কটর প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা ক্রিপ্টো বাজারে অটোমেটেড মার্কেট মেকার (এএমএম) প্রযুক্তি চালু করেছে।
২. লিলি লিউ: সোলানা ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে লিলি লিউ লেয়ার ১ ব্লকচেইনের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছেন।
৩. এলিজাবেথ স্টার্ক: লাইটনিং ল্যাবসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও হিসেবে তিনি বিটকয়েনের লেয়ার-২ সমাধান নিয়ে কাজ করছেন।
৪. কেটলিন লং: কাস্টোডিয়া ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও হিসেবেতিনি ক্রিপ্টো এবং প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করছেন।
৫. অফেলিয়া স্নাইডার: ২১শেয়ারসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি বিশ্বের প্রথম ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড প্রোডাক্ট (ইটিপি) চালু করেছেন।
৬. লরা শিন: ক্রিপ্টো সাংবাদিকতা জগতে লরা শিন একজন পথিকৃৎ।
৭. পেরিয়ান বোরিং: চেম্বার অফ ডিজিটাল কমার্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও হিসেবে তিনি ব্লকচেইন নীতিমালা প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
৮. ডালিয়া মালখি: চেইনলিঙ্ক ল্যাবসের প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ওয়েব৩-এর নিরাপদ অবকাঠামো নিয়ে কাজ করছেন।
৯. এমিলি চোই: কয়েনবেসের প্রেসিডেন্ট এবং সিওও হিসেবে তিনি কোম্পানিকে ক্রিপ্টো বাজারের উত্তাল পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
১০. নেহা নারুলা: এমআইটির ডিজিটাল কারেন্সি ইনিশিয়েটিভের পরিচালক হিসেবে তিনি ক্রিপ্টো জগতের বড় চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে কাজ করছেন।
এই নারীরা ক্রিপ্টো জগতে তাদের অবদান রাখছেন, প্রমাণ করছেন যে উদ্ভাবন এবং নেতৃত্বের কোনো লিঙ্গ নেই।
Rokon
An editor at CryptoCrypto Bloger.